হত্যার শিকার চিকিৎসকের শরীরে অসংখ্য কাটা দাগ

পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেল কক্ষে হত্যাকাণ্ডের শিকার চিকিৎসক জান্নাতুল নাইম সিদ্দিকার (২৭) মরদেহে অসংখ্য কাটা দাগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার গলাসহ সারা শরীরের কাটা দাগগুলো ধারালো অস্ত্রের।বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে সিদ্দিকার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে পাঠায় কলাবাগান থানা পুলিশ।
সুরতহালে কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নার্গিস আক্তার উল্লেখ করেন, নিহতর থুঁতনিতে, ঠোঁটে, গলায় সাড়ে ৮ ইঞ্চি, বাঁ কাঁধে দেড় ইঞ্চি, দুই বৃদ্ধাঙ্গুলিতে, বুকের মাঝখানে, পেটে ৬টি কাটা জখম রয়েছে। এছাড়া তার পিঠে, বাঁ পায়ে হাঁটুর ওপর ও নিচে ছেঁড়া-কাটার দাগ আছে।জানা গেছে, সিদ্দিকাদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদি উপজেলার চন্দন বাড়ি গ্রামে। তারা বর্তমানে রাজারবাগ ২ নম্বর মোমেনবাগ দোলনচাঁপা ভবনে বসবাস করেন। নিহতের বাবা মো. শফিকুল আলম একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। মগবাজার কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে সদ্য এমবিবিএস পাসের পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গাইনি বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন সিদ্দিকা।
শফিকুল জানান, বুধবার (১০ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে তার মেয়ে ক্লাসের কথা বলে বের হন। সকাল ১০টার দিকে তার বাসায় ফেরার কথা ছিল। মেয়ে বাসায় না আসায় তিনি সিদ্দিকাকে বেলা ১১টার দিকে কল দেন। কয়েকবার কল করার পর ফোনটি বন্ধ পান, এরপর থেকে আর যোগাযোগ করতে পারেননি শফিকুল।পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকালে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রেজাউল করিম রেজা নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে এসে পান্থপথে ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামে আবাসিক হোটেলটিতে ওঠেন সিদ্দিকা। এ ব্যাপারে শফিকুল বলেন, সিদ্দিকা একদিন পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল তার (রেজা) সাথে। বলেছিল তার বন্ধু হয়। তার বাড়ি কক্সবাজার। গাজীপুর জয়দেবপুর একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। এর বেশি কিছু আর শুনিনি।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রেজা ও সিদ্দিকা ওই হোটেলটির ৩০৫ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সেখানেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। পরে সেই কক্ষ থেকে সিদ্দিকার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মধ্যরাতে সিদ্দিকার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে রেজাউল সিদ্দিকার গলা কেটে হত্যার পর পালিয়ে গেছেন। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।